করোনা পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের জন্য সরকারের দেওয়া ত্রাণ বিতরণের অনিয়মে এ পর্যন্ত ৭৩ জনপ্রতিনিধিকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
বহিষ্কৃত জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে ২৩ জন ইউপি চেয়ারম্যান, ৪৫ জন ইউপি সদস্য, দুজন উপজেলা পরিষদ সদস্য, জেলা পরিষদ সদস্য একজন এবং দুজন পৌরসভার কাউন্সিলর রয়েছেন।
সব শেষ চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ৩নং মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবসারকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ডিলারের সঙ্গে যোগসাজশে ত্রাণের চাল আত্মসাতের কারণে বহিষ্কার করা হয়েছে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার সুবিল ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান মোল্লাকে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের জন্য সরকারের দেওয়া ত্রাণের চাল চুরির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। যাঁরাই এই চুরির সঙ্গে জড়িত হোক না কেন, প্রমাণ পেলেই তাঁকে অপসারণ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ইউপি-১ অধি-শাখার উপসচিব মোহাম্মদ ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী জানান, গত মার্চ মাস থেকে সরকারিভাবে বরাদ্দ ত্রাণের চাল বা অন্য যেকোনো সামগ্রী যে বা যাঁরাই আত্মসাৎ করেছেন তাঁদের রেহাই দেওয়া হচ্ছে না। ইউপি আইন ২০০৯-এর ৩৪-এর ১ ধারা অনুযায়ী তাঁদের সাময়িক বহিষ্কার করা হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁদের শোকজ নোটিশও দেওয়া হচ্ছে। জবাব সঠিক না হলে তাঁদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হতে পারে।
ত্রাণ নিয়ে অনিয়মে জড়িত জনপ্রতিনিধিদের ছাড় নেই বলে আবারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। গতকাল শনিবার তিনি বলেন, এই বৈশ্বিক মহামারিতে যেসব জনপ্রতিনিধি গরিব জনগোষ্ঠীর জন্য দেওয়া ত্রাণসামগ্রী নিয়ে অনিয়ম বা আত্মসাৎ করবেন, তাঁদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, ‘এসব অনিয়মে জড়িত বেশ কিছু জনপ্রনিধিকে এরই মধ্যে আমরা বহিষ্কার করেছি। তবে শুধু বহিষ্কার নয়, নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলার মুখোমুখিও করা হয়েছে।’ ত্রাণ নয়ছয়ে জড়িতরা কোনো ধরনের অনুকম্পা পাবেন না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ত্রাণের চাল আত্মসাতের দায়ে এ পর্যন্ত যাঁদের অপসারণ করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে কমপক্ষে ২০ জন জেলহাজতে রয়েছেন।